Shilpa Shetty : চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী হিসাবে বিখ্যাত বর্তমানে কিন্তু জার্নিটা এতো সহজ ছিলোনা। অনেক প্রত্যাখান, অপমান সহ্য করেও আজ তিনি এই জায়গায়। এর পেছনে রয়েছে তার অক্লান্ত পরিশ্রম এবং ধর্য।ইনি আর কেউ নন, তিনি শিল্পা শেঠী। বর্তমানে অভিনেত্রীর বয়স ৪৮। তবে ছিপছিপে সুতন্বী দেহকাঠামো এবং অসাধারণ সৌন্দর্যের অধিকারিণীকে দেখে তাঁর বয়স ধরা মুশকিল। নাচে-গানে মাতিয়ে রেখেছিলেন ভক্তদের হৃদয়। আজ তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। অথচ কেরিয়ারের প্রথম দিকে তাঁকেও প্রচুর প্রত্যাখ্যান এবং অপমানের জ্বালা সহ্য করতে হয়েছে। যদিও সকলেই যে সাফল্যের স্বাদ পান এমনটা নয়। কেউ কেউ আবার লড়াই করতে না পেরে চিরতরে হারিয়ে যান স্বপ্নের এই দুনিয়া থেকে। তবে আজ এক সফল অভিনেত্রীর বিষয়ে কথা হচ্ছে।
View this post on Instagram
একবার ‘হিউম্যানস অফ বম্বে’-র কাছে নিজের কেরিয়ার এবং ব্যক্তিগত জীবনের অজানা কথা তুলে ধরেছিলেন অভিনেত্রী। কর্মজীবনের সূচনা প্রসঙ্গে শিল্পা বলেন, “আমি কালো রোগা এবং লম্বা ছিলাম। স্নাতকপাঠ শেষ করে বাবার সঙ্গে কাজ করতে চেয়েছিলাম। যদিও আমি আমার মন থেকে নতুন এবং বড় কিছু করতে চেয়েছিলাম। ভাবিনি যে, আমি সেই সুযোগ পাব। কিন্তু মজা করে একটি ফ্যাশন শোয়ে যোগ দিতে গিয়েই যেন সবটা বদলে যায়।” শিল্পা বলে চলেন, “এক ফটোগ্রাফার আমায় দেখেছিলেন এবং আমার ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। আর এভাবেই আমার গ্ল্যামারের দুনিয়ায় প্রবেশ। এর কিছু সময় পরেই প্রথম ছবির অফার আসে। তারপর অবশ্য ফিরে তাকাতে হয়নি। তবে কেরিয়ারে উত্থান-পতন চলতে থাকে। আসলে অর্থপূর্ণ বিষয়গুলি তো আর সহজে আসে না।” অভিনেত্রীর কথায়, “আমার যখন মাত্র ১৭ বছর বয়স, তখন এসেছিলাম এই ইন্ডাস্ট্রিতে। তখনও দুনিয়াটাকে জানা হয়নি আর জীবনটও বুঝতাম না।” এরপর তাঁকে হিন্দি বলার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে শিল্পার বক্তব্য, “আমি হিন্দি বলতে জানতাম না। তাই ক্যামেরার সামনে আসতে বেশ নার্ভাস লাগত। কয়েকটি ছবি করার পর এমনটা একটা জায়গায় পৌঁছই যে, মনে হতে থাকে আমার কেরিয়ার শেষ। আমি বহুবার চেষ্টা করতাম ঠিকই, কিন্তু কোথাও না কোথাও ঘাটতি থেকে যেত। আমার মনে আছে, কিছু প্রযোজক ছিলেন, যাঁরা কোনও কারণ ছাড়াই আমায় নিজেদের ছবি থেকে রীতিমতো তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।”
View this post on Instagram
এরপর স্মৃতির সরণি বেয়ে অভিনেত্রী তাঁর বিগ ব্রাদার শোয়ের সফরের কথাও তুলে ধরেন। বলেন, “আমার মনে আছে, বিগ ব্রাদার শো-এ অন্য প্রতিযোগীরা আমার প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করতেন। আমার জন্মভূমি ও দেশের কারণে আমায় সকলের সামনেই হেনস্থা করা হত। ফলে লড়াইটা একেবারেই সহজ ছিল না। আমি ওই হাউজে একাই ছিলাম। কিন্তু আমি টিকেছিলাম। অনেক দূর আসার পর আমি এক পা-ও পিছিয়ে যেতে চাইনি। সব শেষে জয়ী হওয়ার পরে বহু মানুষ আমার প্রশংসা করেছেন। আসলে সেখানে যে সঙ্কল্প এবং উদ্যম প্রদর্শন করেছিলাম, সেটাই আমায় সাফল্যের শিখরে নিয়ে গিয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমি শুধু আমার নিজের জন্য রুখে দাঁড়াইনি, যাঁরা বর্ণবিদ্বেষের শিকার হন, তাঁদের হয়েও রুখে দাঁড়িয়েছি। আমার জীবনটা ওঠা-পড়ায় ভরা। খুব খারাপ সময় পার করেছি, কিন্তু আবার কখনও কখনও দারুণ জয়ের স্বাদও পেয়েছি। জীবনের প্রতিটা মুহূর্তই উপভোগ করেছি। আর এটাই আমায় আজ বলিষ্ঠ স্বাধীনচেতা মহিলা, গর্বিত অভিনেত্রী, স্ত্রী এবং মা হিসেবে গড়ে তুলেছে।”
বিয়ে হয়েছে ব্যবসায়ী রাজকুন্দার সাথে। তিনি দুই ছেলেমেয়ের মাও।